Command Palette

Search for a command to run...

পোর্টফোলিও সাইট বানানোর কিছু সাধারণ নীতিমালা
sh4hids
Shahidul Islam Majumder
·6 min read

পোর্টফোলিও সাইট বানানোর কিছু সাধারণ নীতিমালা

ফ্রন্ট-এন্ড বা ব্যাক-এন্ড যে ধরনের ডেভেলপারই আপনি হয়ে থাকুন না, দুনিয়ার সামনে নিজের অভিজ্ঞতাগুলো তুলে ধরার সবচেয়ে সাধারণ (কমন), নির্ভরযোগ্য ও আকর্ষণীয় উপায় হলো একটি পোর্টফোলিও সাইট বানানো। চাকরির ইন্টারভিউ কিংবা সিভিতে যখন চাকরিদাতা আপনার পোর্টফোলিও সাইটের উল্লেখ দেখতে পাবেন তখন ইন্টারভিউর অধিকাংশ প্রশ্নই হবে আপনার করা কাজগুলো নিয়ে। ভাগ্য ভালো হলে হয়তো আপনাকে ইন্টারভিউর ধকল সহ্য করতেই হবে না। আপনার সাজানো-গোছানো পোর্টফোলিও আপনার পক্ষে ইন্তারভিউটি দিয়ে দিবে। কিন্তু একই পোর্টফোলিও সাইটই আপনার চাকরি না পাওয়ার কারণ হতে পারে যদি তা ‘হ-য-ব-র-ল’ ধরণের কিছু হয়ে থাকে।

আজকের লেখাটির মাধ্যমে আমরা জানতে চেষ্টা করবো পোর্টফোলিও সাইট বানানোর কিছু সাধারণ নীতিমালা যা আপনার করা কাজগুলো দুনিয়ার সামনে তুলে ধরবে আকর্ষণীয় ও সাজানো-গোছানোভাবে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে ‘কিলার পোর্টফোলিও’ সাইট বানানোর নীতিমালাগুলো জেনে নেই।

১. আপনার যোগ্যতার সাথে মিল আছে এমন কাজগুলো প্রদর্শন করুনঃ

ধরুন, আমি একজন ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপার। কিন্তু আমার পোর্টফোলিও সাইটে আমি উল্লেখ করেছি php দিয়ে লগ ইন সিস্টেম বানানোর প্রজেক্ট, অনলাইন শপের জন্য ডেটাবেজ ডিজাইন প্রজেক্ট ইত্যাদি। আপনি কি আমাকে ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপার হিসেবে চাকরি দিবেন? তাই নিজের দক্ষতাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য সেই প্রজেক্টগুলোই প্রদর্শন করুন যেগুলো আপনার মূল দক্ষতাকে প্রকাশ করে।

২. যোগাযোগের সঠিক ও পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করুনঃ

ধরুন আপনার দক্ষতা ও কাজ দেখে এক চাকরিদাতা মুগ্ধ। তিনি আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য এক পায়ে খাড়া। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আপনার সাথে যোগাযোগের কোনো উপায় খুঁজে পেলো না। কিংবা আপনার দেওয়া ইমেইল/ফোন নম্বরটি কাজ করে না/বন্ধ। তাহলে এমন পোর্টফোলিও সাইট বানিয়ে আপনার কিংবা চাকরিদাতা কারো কোনো উপকার হবে? তাই নিজের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন। ফোন নম্বর/ইমেইল ঠিকানা পরিবর্তন করে থাকলে তা নিয়মিত আপডেট করুন।

৩. নিজের অনন্যতা ফুটিয়ে তুলুনঃ

আপনার পোর্টফোলিও সাইট হচ্ছে আপনার বিজ্ঞাপন। তাই এই বিজ্ঞাপনকে এমনভাবে তৈরি করুন যা আপনার অনন্যতাকে ফুটিয়ে তোলে, যা আপনাকে অন্যদের চাইতে আলাদা করে তোলে। কিন্তু খুব বেশি অনন্যতা দেখাতে গিয়ে সাইটটিকে এলিয়েনদের সাইটে পরিণত করবেন না। দুনিয়ার মানুষ বোঝে এমন ডিজাইন, প্যাটার্ন, মেথড প্রদর্শন করুন। তা না হলে আমাদের দুনিয়ার পরিবর্তে এলিয়নদের দুনিয়ায় আপনার চাকরি হয়ে যেতে পারে।

৪. সাম্প্রতিক সময়ে করা সেরা কাজগুলো উল্লেখ করুনঃ

আপনি যদি একশোটি সাইট বানিয়ে থাকেন তবে প্রথম বানানো সাইটটির সাথে সর্বশেষ বানানো সাইটটির একটি বিশাল ফারাক দেখতে পাবেন। এর কারণ টেকনোলোজি, ট্রেন্ড, ডিজাইন প্যাটার্ন ইত্যাদির পরিবর্তন। আপনি প্রথম যখন সাইট বানিয়েছিলেন তখন হয়তো স্মার্টফোনের প্রচলন ছিলো না। তাই রেসপন্সিভ ডিজাইন নিয়ে হয়তো তখন কোনো কাজই করেননি। তাই কেবল তখনকার করা কাজগুলোই যদি পোর্টফোলিওতে উল্লেখ করে থাকেন, তবে চাকরিদাতা হয়তো ভাববে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা নেই (যদিও এ ব্যাপারে আপনি একজন গুরু)। কারণ, আপনার পোর্টফোলিওতে সাম্প্রতিক কাজের কোনো উল্লেখ নেই। তাই সেই কাজগুলোই আগে উল্লেখ করুন যেগুলো সাম্প্রতিক প্রযুক্তি ও ট্রেন্ডের প্রকাশ ঘটায়।

৫. সহজ নেভিগেশান সিস্টেম রাখুনঃ

কিলার সাইট বানালেন, নিজের করা সেরা কাজগুলোও উল্লেখ করলেন, কিন্তু নেভিগেশান মেন্যুটি খুঁজে পেতে ভিজিটরের অনেক খোঁজাখুঁজি করতে হলো। কিংবা এতো ভারি প্রযুক্তি ব্যবহার করলেন যে ভিজিটরের ডিভাইসে তা দেখাই গেলো না। তাহলে ভাবুন তখন ভিজিটরের কেমন লাগবে? আপনার কিলার প্রজেক্টগুলোই বা সে কীভাবে ভেবে দেখবে? তাই এমন নেভিগেশান ব্যবস্থা রাখুন যাতে ভিজিটর আপনার সাইটে বিনা বাধায় ভ্রমণ করতে পারে।

৬. কাজের সাথে সম্পর্কিত ছবি ব্যবহার করুনঃ

প্রজেক্ট গ্যালারি বানানোর সময় যথাসম্ভব প্রজক্টের প্রকৃত ছবি ব্যবহার করুন। মোবাইল UI প্রজেক্টে ডেক্সটপ সাইটের ছবি দিলে মোবাইল ডেভেলপার খুঁজছে যারা তারা হয়তো প্রজেক্টের লিংকে ক্লিকই করবে না। ফলে আপনার করা সেরা মোবাইল UI টি অদেখাই রয়ে যাবে। সাথে সাথে চাকরি পাওয়ার যে সম্ভাবনা ছিলো তাও হয়তো উড়ে যাবে।

৭. কাজগুলো বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে প্রদর্শন করুনঃ

আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের কাজ যেমনঃ UI/UX ডিজাইন, ফ্রন্ট-এন্ড/ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি করে থাকেন তবে কাজগুলো বিভিন্ন বিভাগে সাজিয়ে রাখুন। এতে করে ভিজিটর সহজেই যে বিভাগের কাজ দেখতে চান তা দেখতে পাবেন।

৮. নিজের সম্পর্কে বলুনঃ

সাইটের কোনো এক জায়াগায় অল্প করে নিজের সম্পর্কে বলুন। কী খেতে, করতে, পরতে ও পড়তে ভালোবাসেন ইত্যাদি। চাকরিদাতা যদি একবারে সাড়ে একান্ন বার পুশ আপ দিতে পারে এমন লোকের খোঁজে আসে আর আপনার পোর্টফোলিওতে এমন কোনো তথ্যের উল্লেখ পায়, তবে আপনার ভাগ্য খুলেও যেতে পারে।

৯. আগে কোনো ক্লায়েন্ট প্রজেক্ট করে থাকলে, তাদের প্রশংসাবাণীগুলো উল্লেখ করুনঃ

আগে কোনো ফ্রীল্যান্স প্রজেক্ট করে থাকলে, ক্লায়েন্টের কাছ থেকে আপনার কাজ সম্পর্কে দু-চারটি প্রশংসাবাক্য সংগ্রহের চেষ্টা করুন এবং তা আপনার পোর্টফোলিও সাইটে যোগ করে দিন। অনেকটা রেফারেন্সের মতো কাজ করবে এটি।

১০. পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন আপনি কোন কাজটি করতে চানঃ

আপনার পোর্টফোলিও দেখে ভিজিটর যাতে বুঝতে পারে আপনি কোন ধরনের কাজ করতে প্রস্তুত। সম্ভব হলে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করুন, “আমি অমুক কাজের জন্য প্রস্তুত”।

এতোক্ষণ ধরে যা কিছু বললাম, এগুলো কোনো ধরাবাধা নিয়ম নয়। আপনি আপনার মতো করে কাটছাট মেরে এমন কিছু তৈরি করুন যা দেখে ভিজিটরের কাছে আপনার প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ পায়। আপনার সাইট দেখে ভিজিটর যাতে মনে মনে বলে, “একে আমার চাই-ই চাই!”

লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়: এখানে

Comments

  • Type and hit enter to post comment
  • For multiline comments, use Shift + Enter
  • You can use markdown syntax for formatting

Cookie Consent

We use cookies to enhance your browsing experience and analyze our traffic. By clicking "Accept", you consent to our use of cookies.