Command Palette

Search for a command to run...

কম্পিউটার
tanzilamd
Tanzil Ahmed
·7 min read

কম্পিউটার

যদি কখনো এরকম খবর আসে যে পৃথিবীতে আর কম্পিউটার থাকবে না , তাহলে !!! হ্যাঁ বন্ধুরা বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে কম্পিউটার ব্যাবহার হচ্ছে । যেগুলো কাজ কম্পিউটার ছাড়া অচল । কিন্তু কম্পিউটার কি মানুষের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান ? তার আগে একটা প্রশ্ন, যিনি সৃষ্টি করেন তার জ্ঞান বেশি নাকি যা সৃষ্টি হয়েছে সেটির জ্ঞান বেশি ? অবশ্যই যিনি সৃষ্টি করেছেন তার জ্ঞান বেশি । কারণ, যিনি এতো চিন্তা-ভাবনা করে কোন কিছু সৃষ্টি করেন সেই সৃষ্টির জ্ঞান স্রষ্টার থেকে বেশি হবে না । মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছে , সেই মানুষের জ্ঞান কম্পিউটারের থেকে কখনো কম হবে না , নিঃসন্দেহে । তাই , সব কাজে কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে । কিন্তু , আমাদের জানতে হবে ।

কম্পিউটারের জনক : কম্পিউটারের জনক কে, এটা একটা বিরোধপূর্ণ প্রশ্ন। বেশিরভাগের উত্তর হবে, চার্লস ব্যাবেজ, কেউবা বলবে হাওয়ার্ড আইকেন। আসলে দিনে দিনে ক্রমোন্নতির এক সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কম্পিউটার আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। আসলে শুধু একজন নয়, অনেকের অবদানেই ঋদ্ধ এই কম্পিউটার!

কম্পিউটারের মজার ইতিহাস : মজার বিষয় হলো, সর্বপ্রথম কম্পিউটার শব্দটি দ্বারা কোনো যন্ত্রকে বোঝাতো না। বরং যারা হিসাব-নিকাশের কাজ করতো, তাদের বোঝাতো। কম্পিউটার শব্দটির প্রথম ব্যবহার পাওয়া যায় ১৬১৩ সালে রিচার্ড ব্র্যাথওয়েইটের লিখিত একটি বইয়ে। শুরুতে আদতে এর দ্বারা কোনো যন্ত্রকেই বোঝাতো না, এটি ছিল একটি চাকরির পদবির নাম। কম্পিউটার ছিল এমন একজন ব্যক্তি, যে কি না হিসাব-নিকাশের কাজ করতো; কখনো যন্ত্রের সাহায্যে, কখনো বা সাহায্য ছাড়াই! এই পদবী অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরু পর্যন্ত চলতে থাকে, যার পর থেকে এর দ্বারা মানুষকে না বুঝিয়ে যন্ত্রকে বোঝানো শুরু হয়।

কম্পিউটারের ইতিহাস : কম্পিউটারের ইতিহাস এতটাই বড় যে বলে শেষ করা যাবে না । আমি চেষ্টা করছি সংক্ষেপে বলার । যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুততা আর নির্ভুলতা খুবই প্রয়োজনীয়; তাই সামরিক খাতেই জটিল হিসাব-নিকাশের যন্ত্র প্রথম ব্যবহৃত হয়। এমনই সমস্যা দূরীকরণে চার্লস ব্যাবেজ ১৮২২ সালে রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে একটি পত্র লিখলেন। চার্লস ব্যাবেজ 'ডিফারেন্স ইঞ্জিন' নামে সম্পূর্ণ নতুন এক জটিল যন্ত্রের প্রস্তাবনা করেন, যা বহুপদীর সমাধান করতে পারতো। এই বহুপদী সমীকরণগুলোর সাহায্যে লগারিদমীয় এবং ত্রিকোণমিতিক সমস্যার সমাধানও করা যেত।

১৮২৩ সালে ব্যাবেজ এই যন্ত্র তৈরি করা শুরু করেন। দুই দশক ধরে ২৫,০০০ যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে তৈরি এই যন্ত্রের ওজন দাঁড়ায় ১৫ টনেরও বেশি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রজেক্টটি বাতিল হয়। কিন্তু ১৯৯১ সালে ঐতিহাসিকগণ ব্যাবেজের মডেল অনুযায়ী ডিফারেন্স ইঞ্জিন তৈরি করতে সক্ষম হন, যা কাজও করে! ইতোমধ্যেই ইংরেজ গণিতবিদ অ্যাডা লাভলেস ইতিহাসে প্রথম কমান্ড লেখেন, যার জন্য তাকে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম প্রোগ্রামার বলা হয়। তিনি বলেন, ”একটি নতুন, বিশাল পরিসরে ব্যবহার উপযোগী একটি শক্তিশালী ভাষা তৈরি হয়েছে, যা ভবিষ্যতে ব্যবহার করা যাবে।“

কম্পিউটারের প্রকারভেদ : কম্পিউটারের গঠন ও নীতির উপর ভিত্তি করে একে ৩(তিন) ভাগে ভাগ করা যায় , ১) এনালগ কম্পিউটার, ২) ডিজিটাল কম্পিউটার, ৩) হাইব্রিড কম্পিউটার । ডিজিটাল কম্পিউটারকে আবার আকার, সামর্থ্য, দাম ও ব্যবহারের গুরুত্তের ভিত্তিতে আবার চার ভাগে ভাগ করা যায় , ১) মাইক্রো কম্পিউটার, ২) মিনি কম্পিউটার, ৩) মেইনফ্রেম কম্পিউটার, ৪) সুপার কম্পিউটার । মাইক্রো কম্পিউটারকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়, ১) ডেক্সটপ, ২) ল্যাপটপ । (বর্তমানে ডেক্সটপ ও ল্যাপটপ কম্পিউটারের ব্যবহার বেশি)

কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার : একটি কম্পিউটারকে সাধারনত দুটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা: হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার। হার্ডওয়্যার হল সেই সব অংশ যা দৃশ্যত এবং স্পর্শ করা যায়, যার কাঠামো আছে। কম্পিউটার হার্ডওয়্যার হল কম্পিউটারের সেইসকল অংশ যেগুলো স্পর্শ করা যায়, দেখা যায় যেমন : মনিটর, মাউস, কেসিং, মাদারবোর্ড, রম, সি.ডি, ডি.ভি.ডি. ইত্যাদি। কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রাংশ দিয়ে একটি পারসোনাল কম্পিউটার তৈরি হয়। এরপর এতে অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করা হয় এবং ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন সফটওয়্যার ইন্সটল করা হয়।

কোন কম্পিউটার কিনবো : আসলে সত্যি কথা বলতে কী, কম্পিউটার কেনার আগেই আপনাকে ভেবে নিতে হবে- আপনার বাজেট কত টাকা। বাজারে বিভিন্ন বাজেটের কম্পিউটার রয়েছে। কিন্তু আপনাকে বুজতে হবে- ঠিক কোন কম্পিউটারটি আপনি কিনবেন বা আপনার বাজেটের মধ্যে যে কম্পিউটার আপনি কিনবেন তা দিয়ে আপনার প্রয়োজন সম্পূর্ণ মিটবে কিনা। কম্পিউটার মার্কেটে হাজারও ক্লোন কম্পিউটার রয়েছে। ক্লোন শব্দটি আসলে As it is বাক্যের বিকল্প।

এই হিসেবে বাজারে দুই ধরনের কম্পিউটার কিনতে পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে একটি হলো ক্লোন (Clone) , অপরটি হলো ব্র্যান্ড (Brand) ।

Clone Computer : এই ধরনের কম্পিউটারের অর্থ হলো- বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি কতৃক প্রস্তুতকৃত কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সাহায্যে একটি সক্ষম কম্পিউটার তৈরি করা । এটা অবশ্য তৈরি করা বুঝায় না – এটা হলো কম্পিউটার অ্যাসেম্বল (Computer Assemble) করা। ব্যবহারকারীরা পছন্দমতো বিভিন্ন ধরনের উপযোগিতামূলক বিভিন্ন কোম্পানির যন্ত্রাংশ যোগ করতে পারেন।

Brand Computer : পৃথিবীর নামকরা কিছু কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তাদের কোম্পানীর কিছু কম্পিউটার বাজারে ছেড়েছেন শুরু থেকেই । একটি ব্র্যান্ড কম্পিউটারের সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো – এই কম্পিউটারের অভ্যন্তরের যন্ত্রাংশ একে অপরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ । ফলে ব্যাবহারকারী তার ইচ্ছা মতো যে কোন ধরনের সফটওয়্যার চালনা করতে পারেন । ব্র্যান্ড কম্পিউটারের প্রধান সমস্যা হলো – এটা সাধারণ ক্লোন কম্পিউটারের দামের চেয়ে দিগুণ , কখনও কখনও তিনগুন হয়ে থাকে । ব্র্যান্ড কম্পিউটারের আরেকটি সমস্যা হলো – এই কম্পিউটারে ব্যাবহারকারী তার ইচ্ছামতো অন্য কোম্পানীর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কোন যন্ত্রাংশ ব্যাবহার করতে পারে না । এই ধরনের আরও কিছু বাধ্যবাধকতা আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে ব্র্যান্ড কম্পিউটারকে জনপ্রিয় করতে পারেনি ।

আশা করি আপনাদের কম্পিউটার সম্বন্ধে প্রাথমিক ধারণা দিতে পেরেছি । সামনে ইনশাআল্লাহ কম্পিউটার বিষয়ে আরও লেখা নিয়ে আশার চেষ্টা করবো । ধন্যবাদ প্রিয় পাঠক, আমার লেখাটি শেষ পর্যন্ত পরার জন্য । ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ।

Comments

  • Type and hit enter to post comment
  • For multiline comments, use Shift + Enter
  • You can use markdown syntax for formatting

Cookie Consent

We use cookies to enhance your browsing experience and analyze our traffic. By clicking "Accept", you consent to our use of cookies.